সঠিক খাদ্য গ্রহণ, প্রয়োজনীয়তা ও নির্দেশাবলী
সঠিক খাদ্য গ্রহণ, প্রয়োজনীয়তা ও নির্দেশাবলী
- Advertisement -
সঠিক খাদ্য গ্রহণ, প্রয়োজনীয়তা ও নির্দেশাবলী
কৃষিবিদ মোহাইমিনুর রশিদ
ছোটবেলা পড়েছিলাম আমরা যা খাই তাই খাদ্য। সময়ের আবর্তে আজ প্রশ্ন জেগেছে মনে, আসলেই কি তাই? বিজ্ঞান বলে, শরীর গঠন, ক্ষয়পূরণ ও রোগ প্রতিরোধে সহায়ক খাবারই খাদ্য। খাদ্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত বিষয় হলো পুুষ্টি। অত্যন্ত সহজ ভাষায় বলতে গেলে, খাবার গ্রহণের পর শরীর যা গ্রহণ করে তাই পুষ্টি। খাদ্য উৎপাদনে আজ আমরা স্বয়ং সম্পূর্ণ। তবে বর্তমানে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। একটু বাড়িয়ে বললে, শিশু ও মাতৃ পুষ্টি নিশ্চিতকরণ এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পর্যায়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্যের সমন্বয়ে পরিপূর্ণ পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণে এখনও অনেকখানি পেছনে আছি। সঠিক খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস না করায় একদিকে পুষ্টিহীনতা অন্যদিকে নানাবিধ রোগশোক আমাদের আক্রান্ত করছে। পুষ্টিহীনতায় সংগঠিত হচ্ছে খর্বকায়, নি¤œওজন এবং কৃশকায়। আর অন্যদিকে খাদ্য সংক্রান্ত দীর্ঘমেয়াদি সংক্রামক রোগগুলো হল স্থুলতা, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, করোনারি হার্ট ডিজিজ, স্ট্রোক, ক্যান্সার ও বেশি বয়সে হাড় নরমসহ আরোও নানাবিধ রোগ।
সম্প্রতি বাংলাদেশের জনসংখ্যায় এক গবেষণায় দেখা গেছে, এক তৃতীয়াংশের অধিক শিশু প্রোটিন ও ক্যালরিজনিত পুষ্টিহীনতায় ভোগে, যার মধ্যে খর্বাকৃতি ৩৬%, কৃশকায় ১৪% এবং নিম্ন ওজনে রয়েছে ৩৩%। গড়ে এক চতুর্থাংশ মহিলা দীর্ঘস্থায়ী ক্যালরিজনিত অপুষ্টিতে ভোগে, যাদের অধিকাংশেরই দেহে একই সাথে জিংক, আয়রণ ও আয়োডিনের স্বল্পতা রয়েছে। তাই নি:সন্দেহে বলা যায়, সঠিক খাদ্যাভ্যাসের প্রয়োজনীয়তা সীমাহীন।
মানুষের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন খাদ্য গ্রহণ নির্দেশণা। জাতীয় খাদ্য গ্রহণ নির্দেশিকা মোতাবেক জনগণের জন্য যে নির্দেশনাগুলো রয়েছে তা হল- ক) প্রতিদিন সুষম ও বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্য গ্রহণ, খ) পরিমিত পরিমাণে তেল ও চর্বিজাতীয় খাবার গ্রহণ, গ) প্রতিদিন সীমিত পরিমাণ আয়োডিনযুক্ত লবণ গ্রহণ ঘ) মিষ্টিজাতীয় খাদ্য সীমিত পরিমাণ গ্রহণ, ঙ) প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি গ্রহণ, চ) নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ, ছ) সুষম খাদ্য গ্রহণ ও শারীরিক শ্রমের মাধ্যমে আদর্শ ওজন বজায়, জ) সঠিক পদ্ধতিতে রান্না, সঠিক খাদ্যাভাস এবং সুস্থ জীবনযাপন, ঝ) গর্ভাবস্থায় এবং স্তন্যদানকালে চাহিদা অনুযায়ী বাড়তি খাদ্য গ্রহণ, ঞ) শিশুকে ০৬ মাস পযর্ন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ প্রদান এবং ০৬ মাস পরে বাড়তি খাদ্য প্রদান।
১. প্রতিদিন সুষম ও বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্য গ্রহণ:
শর্করা: সুষম ও বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিদিন শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণ শস্য ও শর্করাজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। শর্করাজাতীয় খাবার মূলত শক্তি যোগায় তাই চাল ও গম থেকে প্রস্তুতকৃত খাবার যেমন ভাত, চিড়া, মুড়ি, পিঠা, রুটি, পরোটা, খিচুড়ি, পোলাও ও অন্যান্য খাবার খেতে হবে। গমে শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় খনিজ লবণ যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, কপার এবং ভিটামিন বি পাওয়া যায়। আঁশ জাতীয় শস্য খাবার পিত্তথলির পাথর, হার্টের অসুখ, কোলন ক্যান্সার ও অন্যান্য রোগের উপশম ঘটায়। ভুট্রা, গমের আটা, সিদ্ধ ও ঢেঁকিছাটা চালে প্রোটিন ছাড়াও যথেষ্ট পরিমাণ থায়ামিন, রিবোফ্লাবিন, নায়াসিন ও আঁশ থাকে। পরিশ্রম ভেদে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ২৭০ থেকে ৪৫০ গ্রাম চাল বা গম গ্রহণ করা উচিত।
আমিষ: প্রতিদিন চাহিদামাফিক মাছ, মাংস, ডিম এবং ডাল গ্রহণ করা উচিত। এসব আমিষের উৎস। দেহের বৃদ্ধি, কার্যক্ষমতা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমিষজাতীয় খাবার প্রয়োজন। সামুদ্রিক মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন ডি ও ভিটামিন বি পাওয়া যায় যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ যা হাড় ও দাত মজবুত করে। মাংসে প্রোটিন ও আয়রণ ছাড়াও ক্যালসিয়াম, জিংক ও কপার থাকে। প্রতিদিন মাছ খেলে রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বাড়ে না। ডাল ও বীজজাতীয় খাদ্য প্রোটিনের অন্যতম উৎস। মটর ও মসুর ডালে স্যাপোনিন থাকে যা রক্তের কোলেস্টেরল কমায়। ডিম হলো উচ্চমানের প্রোটিনজাতীয় খাবার। ডিমে প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, আয়রণ, ফসফরাস, পটাশিয়াম এবং জিংক থাকে। শিশুদের প্রতিদিন একটি করে ডিম দেওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষ দেহে ক্ষয়পূরণের লক্ষ্যে প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ০.৮ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত। অর্থ্যাৎ ৬০ কেজি ওজনের একজন ব্যক্তির দিনে ৪৮ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন। তবে অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ কিডনির জন্য ক্ষতিকর। পুষ্টিবার্তা বলা আছে, প্রতিদিন মাঝারি আকারের ১-৪ টুকরা মাছ/মাংস, প্রায় আধা কাপ ডাল গ্রহণ করা উচিত।
ভিটামিন ও খনিজ লবণ: প্রতিদিন প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষ ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম আঁশ, ১১৫ থেকে ১২৫ গ্রাম ফল এবং ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম শাকসবজি গ্রহণ করা উচিত। ভিটামিন ও খনিজ লবণের মূল উৎস হল ফলমূল ও শাকসবজি। গাঢ় সবুজ ও লালশাকে ফলিক এসিড ও পটাশিয়াম বেশি বেশি থাকে। হলুদ ও কমলা রঙের সবজি ও ফলমূলে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম থাকে। শাকসবজি ও ফলমূলের আঁশ শরীরের বর্জ্য, অতিরিক্ত কোলেস্টেরল এবং কিছু ক্যান্সার উৎপন্নকারী উপাদানকেও অপসারণ করে। রঙিন শাকসবিজ এবং ফলমূলে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ক্যান্সার প্রতিষেধক। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ ও রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে। পটাশিয়াম হৃদরোগের ঝুকি কমায়। মাশরুম গ্রহণে ক্যান্সার, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস রোগের ঝুকি কমায়। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ২ টি মৌসুমি ফল (১০০ গ্রাম) গ্রহণ করা উচিত। খাবার গ্রহণের পর আয়রণের পরিশোষণের জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খাওয়া উচিত। প্রতিদিন অন্তত ১০০ গ্রাম শাক এবং ২০০ গ্রাম সবজি খাওয়া প্রয়োজন।
সার্বিক সুস্থতা বিশেষ করে মজবুত হাড় ও দাত গঠনে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস এর জন্য দুধ একটি উৎকৃষ্ট আদর্শ খাদ্য। দুধে প্রোটিন, ল্যাক্টোজ, ভিটামিন বি-১২ রয়েছে যা পেশির বৃদ্ধি ও সঠিক কার্যক্ষমতাতে ত্বরান্বিত করে। হাড়কে শক্তিশালী করার জন্য শিশুদের পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ খাওয়ানো উচিত। দুধ অস্টিওপোরোসিস রোগ প্রতিরোধ করে। দুধ খেয়ে হজম করতে না পারলে দই খাওয়া উচিত। দই পরিপাকে সহযোগিতা করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ১ কাপ বা ১৫০ মিলি দুধ বা আধা কাপ দই খাওয়া উচিত। বয়স্ক ব্যক্তিদের ননিতোলা দুধ ও সয়া দুধ খাওয়ান।
২. পরিমিত পরিমাণে তেল ও চর্বিজাতীয় খাবার গ্রহণ
শরীরে শক্তি সরবরাহের জন্য তেল ও চর্বি অত্যন্ত প্রয়োজন। প্রাণিজ ও উদ্ভিজ উৎস হতে তেল ও চর্বি পাওয়া যায়। প্রতি গ্রাম তেল ও চর্বি হতে ৯ গ্রাম শক্তি পাওয়া যায়। খাদ্যের তেল ও চর্বি ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন কে এসবকে পরিশোষণ করতে সাহায্য করে। তেল এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা ক্যান্সার রোধ করে। কোলেস্টেরল রক্তে খুব ক্ষতিকর হলেও মস্তিষ্ক গঠনে ইহা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। মাছের তেলে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়। প্রতিদিন জনপ্রতি ২-৩ টেবিল চামচ তেল গ্রহণ করা উচিত। অতিরিক্ত ভাজা ও তৈলাক্ত খাবার বর্জন করা উচিত। উচ্চ চর্বিযুক্ত ফাস্টফুড পরিহার করা অত্যাবশ্যকীয়।
৩. প্রতিদিন সীমিত পরিমাণ আয়োডিনযুক্ত লবণ গ্রহণ
খাদ্যে পরিমিত পরিমাণ আয়োডিন থাকা খুবই জরুরী। আয়োডিনের অভাবে খর্বাকৃতি, মানসিক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, গলগন্ড এসব রোগ হয়। বাজারে প্যাকেটজাত আয়োডিন লবণ গ্রহণ করা উচিত। আয়োডিন উদ্বায়ী হওয়ায় লবনের কৌটার মুখ খোলা রাখবেন না। চুলার কাছাকাছি রাখবেন না। তরকারি রান্না হওয়ার শেষের দিকে লবণ ব্যবহার করা উচিত। প্রতিদিন ১ চা চামচ এর কম পরিমাণ আয়োডিনযুক্ত লবণ গ্রহণ করা উচিত। খাবারের সময় বাড়তি লবণ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন। টেস্টিং সল্ট গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪. মিষ্টিজাতীয় খাদ্য সীমিত পরিমাণ গ্রহণ
চিনি ঘনীভূত শক্তির উৎস। এতে বিশেষ কোনো পুষ্টি উপাদান থাকে না বললেই চলে। অধিক চিনি গ্রহণ করলে শরীর স্থুলকায় করে, পরবর্তীতে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এ্যাজমা রোগের ঝুকি বাড়ায়। তাছাড়া শিশুদের খাদ্যে অরুচি, দাত ক্ষয় হয়ে থাকে। প্রতিদিন মৌসুমি ফল খেয়ে চিনির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। প্রতিদিন ২৫ গ্রাম এর কম চিনি গ্রহণ করা উচিত। মিষ্টি কোমল পানীয় বর্জন করা উচিত। ফল খেয়ে চিনির চাহিদা পূরণ করা উচিত।
৫. প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি গ্রহণ
খাদ্য পরিপাক, পরিশোষণ, পরিবহন, বর্জ্য পদার্থ দূরীকরণ ও শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষার জন্য পানি প্রয়োজন। কিডনির সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রাপ্তবয়স্কদের দৈনিক পানির চাহিদা প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ৪৩ মি.লি.। আমাদের দেশে ৩৫-৭৫ কেজি দৈহিক ওজনের ব্যক্তিদের জন্য দৈনিক পানি দরকার ১.৫-৩.৫ লিটার। কোমল পানীয় এবং কৃত্রিম জুসের পরিবর্তে ডাবের পানি বা টাটকা ফলের রস পান করা পুষ্টিসম্মত।
৬. নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ
পঁচা বাসি খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। রান্নাঘর, তরকারি, মাছ, মাংস কাটার স্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ভেজাল, অনুমোদনবিহীন ও মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতিকর রঙ ও গন্ধের ব্যবহার করা হয় এমন খাবার স্বাস্থ্যের জন্য বিপদজনক। ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত খাদ্য হতে দূরে থাকুন। ক্ষতিকর বালাইনাশক ব্যবহার, মাত্রাতিরিক্ত হরমোন ব্যবহার করা শাক সবজি, ফলমূল খাওয়া যাবে না। খাবার প্রস্তুুত ও গ্রহণকালে খাদ্য নির্বাচন, লেবেল, খাদ্য সংরক্ষণ, উৎপাদন ও মেয়াদ দেখে খাদ্য সংগ্রহ করুন।
৭. সুষম খাদ্য গ্রহণ ও শারীরিক শ্রমের মাধ্যমে আদর্শ ওজন বজায়
সুষম খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি শারীরিক ব্যায়াম করা উচিত। নিয়মিত ব্যায়াম উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এসব মারাত্নক রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। শরীরের আদর্শ ওজন (বি.এম.আই ১৮.৫-২৩.০০ এর মধ্যে, পুরুষদের কোমরের পরিধি ৯০ সেমি বা তার কম এবং মহিলাদের কোমরের মাপ ৮০ সেমি বা তার কম) বজায় রাখার জন্য নিয়মিত পর্যাপ্ত ব্যায়াম করা উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট দ্রুত বেগে বা ৭৫ মিনিট অতিদ্রুত বেগে হাঁটার পরামর্শ দিয়েছে। তাই প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪৫ মিনিট হাঁটা বা দৌড়ানো, ব্যায়াম করা, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাঁটা এসব শারীরিক শ্রমগুলো করা উচিত।
সবজি রান্নার জন্য উচ্চ তাপে ও কম সময়ে রান্নার পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত। সাধারণত ভাঁপানো ও সেঁকা খাবার অধিক পুষ্টিসম্মত। তাছাড়া সবজি কাটার পরে ফল ও সবজি বাতাসে খোলা অবস্থায় রাখা উচিত নয়। রান্নার সময় সবসময় ঢাকনা ব্যবহার করা উচিত। খাবার সময়মত গ্রহণ করা উচিত। অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ না খাওয়াই ভালো। নিয়মিত মৌসুমি ফল খাওয়া উচিত। খাবারের পরপরই একটু হালকা ব্যায়াম করা ভাল তবে কোন মতেই ঘুমানো যাবে না। গর্ভাবস্থায় এবং স্তন্যদানকালে চাহিদা অনুযায়ী বাড়তি খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। শিশুকে ০৬ মাস পযর্ন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ প্রদান এবং ০৬ মাস পরে বাড়তি খাদ্য প্রদান করা উচিত। আজকের এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি লিখতে যেয়ে জাতীয় খাদ্য গ্রহণ নির্দেশিকাটির সহযোগিতা নিয়েছি। আমি মনে করেছি সকল জনগণের এই গুরুত্ব বিষয়টি সম্পর্কে জানা উচিত।
আমাদের সকলের মনে রাখতে হবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস দ্বারা পুষ্টি নিশ্চিত করা যায়। আর জনগণের পুষ্টিগত অবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে রোগশোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। ফলে অযাচিত রোগ থেকে সহজেই মুক্তি মেলে। জীবনী শক্তির সাথে আয়ুষ্কালও বৃদ্ধি পাবে সর্বোপরি শক্তিশালী মানব সম্পদ তৈরি হবে। আমরা হয়ত সবাই জানি, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। অসুস্থ হলেই আমরা টের পাই স্বাস্থ্য কি জিনিস। তাই আমাদের শুধু জানলেই হবে না মানতেও হবে। মেনে নিলেই হবে না মনেও নিতে হবে এই সত্য বাণীটি। সবশেষে একটি উদ্ধৃতি দিয়ে শেষ করতে চাই,
নিজের যত্ন না নিলে নিজে, অন্যের ওপর ভরসা মিছে।
—–
- Advertisement -