- Advertisement -
বসতবাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চাষ
বাংলাদেশে মোট আবাদি জমির শতকরা পাঁচ ভাগের মত জমি নিয়ে প্রায় দেড় কোটি বসতবাড়ি রয়েছে। এসব বসতভিটায় সাধারণত বন্যার পানি প্রবেশ করে না। তাই এসব বাড়ির আঙ্গিনায় সারা বছর ধরেই কোন না কোন ফসল বা গাছপালা জন্মানো সম্ভব। এ সমস্ত ভূমিতে বৃষ্টির পানি জমতে পারে না। ফলে অনায়াসে অধিক আর্দ্রতা ও উষ্ণ তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে এমন সবজি আবাদ করা সম্ভব। বসতবাড়ির আঙ্গিনার সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর চাহিদা এবং সবজি ও ফলমূল চাষের মাধ্যমে তা অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব।
উদ্দেশ্য
১। বছরব্যাপী নানা রকম শাক-সবজি, ফলমূল উৎপাদন করে পারিবারিক খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন এবং পুষ্টি ও আয় বৃদ্ধি করা।
২। পরিবারের সদস্যদের সবজি ও ফল উৎপাদনে উৎসাহিত করা এবং পারিবারিক শ্রমের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা।
৩। অতিরিক্ত আয়ের সংস্থান করা।
বসত বাড়ির আঙ্গিনায় কোথায় কোন জাতের ফসল আবাদ করা যায়
(ক) খোলা জায়গায় ফসল:
কৃষকদের অতি পছন্দের তালিকায় শাক-সবজিগুলো হচ্ছে লালশাক, ফরাস শিম, দেশী শিম, বরবটি, ডাঁটা ইত্যাদি। বাগানের অবস্থান ও আকার প্রাপ্ত স্থানের উপর নির্ভর করেই ঠিক করতে হবে। বেডের সংখ্যা হবে ৪টি। এ অঞ্চলে বাড়ির আঙ্গিনায় বিন্যাসভিত্তিক সবজি আবাদের জন্য রোদ লাগে এমন খালি জায়গা সবজি আবাদের জন্য নির্বাচন করাই উত্তম। অপেক্ষকৃত উঁচু এলাকা হিসাবে সিলেটের এই অঞ্চলে বসত ভিটা তুলনামূলকভাবেই একটু বড়। স্থানীয়ভাবে সবজি বীজেরও অভাব রয়েছে, তাছাড়া সংশ্লিষ্ট কৃষকদের সময়ের সংস্থান করার প্রয়োজনীয়তার কথা চিন্তা করে প্লট সংখ্যা চারটি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখা যুক্তিসংগত বলে বিবেচিত হয়েছে।
সবজি বাগানের জন্য সুপারিশকৃত শস্যবিন্যাস গুলো হলো:
সবজি বাগানের চারটি বেডে সারা বছর উৎপাদনের জন্য নিম্নে বর্ণিত চারটি সবজি বিন্যাস অনুসরণ করার জন্য সুপারিশ করা যায়।
প্রথম বেড : টমেটো/মুলা -ডাটা- গীমাকলমি
দ্বিতীয় বেড :লাইশাক/বাঁধাকপি -ডাঁটা- ঢেঁড়শ
তৃতীয় বেড : বেগুন/লালশাক -পুঁইশাক- গীমাকলমি
চতুর্থ বেড : ফরাস শিম- লালশাক – পুঁইশাক/বরবটি
খ) মাচায় ফসল
লতাজাতীয় সবজির মধ্যে শিম, বরবটি, চালকুমড়া, শশা, চিচিংগা, ঝিংগা, ধুন্দুল,করলা উল্লেখযোগ্য।
(গ) অফলা গাছে ফসল
অফলা গাছের ওপর গোল মরিচ ও মেটে/গাছ আলু সফল ভাবে চাষ করা সম্ভব।
(ঘ) স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায়
স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় বিভিন্ন কচু জাতীয় বিশেষ করে পানি কচুর চাষ করা যায়।
(ঙ) আইলে /সীমানায়
কম প্রচলিত সবজি যেমন কাঁচাকলা ও সাজনা বসত বাড়িতে সফল ভাবে চাষ করা যায়। এগুলো বসত বাড়ির যে কোন জায়গায় যেমন পুকুর পাড় ও তুলনামুলকভাবে কম আলো পায় এমন জায়গাতে চাষ করা সম্ভব। এসব সবজি অসময়ে পরিবারের সবজি চাহিদা মেটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। বসতবাড়ির সীমানার চতুর্দিকে পেয়ারা, লিচু, লেবু, কমলা, বাতাবীলেবু, ইত্যাদি ফল জাতীয় গাছ রোপন করা যাবে।
(চ) বসতবাড়ির ঢালু জমিতে
ঢালু জমিতে আনারস চাষ অধিক লাভ জনক।
সবজি সংগ্রহ
পাতা জাতীয় সবজি যেমন পুঁইশাক, লাউ, ও মিষ্টিকুমড়ার লতা, কচুর ডগা ও সজিনার পাতা যতটুকু সম্ভব কচি অবস্থায় সংগ্রহ করতে হবে। ফলজাতীয় সবজির মধ্যে টমেটো ও কাকরোল হলুদ রং হবার ঠিক আগে, ঢ়েঁড়শ, বেগুন, লাউ, ঝিংগা, চিচিংগা ,শশা ধুন্দল, কাঁচাকলা, ও সাজনা কচি অবস্থায় ,চালকুমড়া ,পেঁপে ও মরিচ কাঁচা ও পাকা দুই অবস্থাতেই এবং শিম কচি ও বীজ অবস্থায় সংগ্রহ করা যেতে পারে।
বসত বাড়িতে সবজি চাষের সুবিধা
১) বসতবাড়ির প্রতিটি উৎপাদনযোগ্য স্থানের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা যায়।
২) ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ এর চাহিদা পুরণ করা যায়।
৩) লৌহ ও ক্যালসিয়ামের চাহিদা আংশিক ভাবে পূরণ করা যায়।
৪) স্বল্প পরিসরে হলের নারীর ক্ষমতায়ন ঘটে।
৫) বিক্রির মাধ্যমে কিছু অর্থও পাওয়া যায়।
৬) বিনামূল্য বিতরণের মাধ্যমে প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সম্পর্কের উন্নতি ঘটে।
৭) বিভিন্ন সবজিএর উন্নত জাত ও প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ঘটে।
৮) পতিত জায়গা চাষের মাধ্যমেপরিবেশের উন্নয়ন ঘটে।
৯) প্রায় ক্ষেত্রেই পরিবারের সদস্যদের সুষম সবজি চাহিদা পূরণ করা যায় ও স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
- Advertisement -
আপনার লেখা পড়ে খুব ভাল লাগল তাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাই আমার বাড়ির সামনে তিন শতকের মত একটা উঠন আছে আমি সেখান কিছু সবজি বা ফল মুল চাষাবাদ করতে চাই, কিন্তু আমার মাটি সম্পুর্ন বেলে মাটি এখন কিভাবে এই জমি উর্বর করবো,এবং কা ক্ষতি ফসল লাব করতে পারবো